Uttarbanger Bodo-Mech Janajatir Lokaja Utsab o Palaparban/ উত্তরবঙ্গের বোড়ো-মেচ জনজাতির লোকজ উৎসব ও পালাপার্বণ

Authors

  • Bikash Narjinary গবেষক, বাংলা বিভাগ, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় Author

Keywords:

  • বোড়ো-মেচ,
  • জনজাতি,
  • ভাষা ও সংস্কৃতি,
  • উৎসব ও পালাপার্বণ

Abstract

উত্তরবঙ্গের বোড়ো-মেচ জনজাতির লোকজ উৎসব ও পালাপার্বণ আলোচনার আগে ‘উত্তরবঙ্গ’ সম্পর্কে কিছু ধারণা থাকা দরকার। ‘উত্তরবঙ্গ’ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরাংশে অবস্থিত দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, উত্তর-দক্ষিণ দুই দিনাজপুর এবং মালদহ এই সাতটি জেলা নিয়ে গঠিত। আসলে এই জেলাগুলি ‘জলপাইগুড়ি ডিভিশনভুক্ত’, এর ভৌগোলিক সীমানা উত্তরে সিকিম ও ভুটান রাষ্ট্র, পশ্চিম সীমানায় বিহার রাজ্য ও নেপাল রাষ্ট্র, পূর্ব সীমানায় অসম রাজ্য, দক্ষিণে গঙ্গা নদী ও মুর্শিদাবাদ এবং দক্ষিণ-পূর্বে বাংলাদেশ। কিন্তু আজকে সাধারণভাবে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং দার্জিলিং জেলাকে উত্তরবঙ্গ হিসাবে ধরে নেওয়া যায়।

বিশ্বের মধ্যে বৈচিত্র্যের আর এক নাম হল ‘উত্তরবঙ্গ’। বৈচিত্র্য যেমন এখানকার প্রকৃতিতে তেমনি রয়েছে মানব সমাজে। ভারততীর্থের মতো বৈচিত্র্যপূর্ণ উত্তরবঙ্গের ভূখণ্ডে চারটি ভাষাগোষ্ঠী বিদ্ধমান— ভারতীয় আর্য, দ্রাবিড়, অস্ট্রিক ও মঙ্গোলীয়। আমরা জানি উত্তরবঙ্গে বোড়ো-মেচ, রাভা, গারো, টোটো, ধীমাল, চাঁই, লেপচা, তামাং, ওঁরাও, মুন্ডা, সাঁওতাল, রাজবংশী প্রভৃতি জনজাতির বসবাস— যার ফলে মিশ্র সংস্কৃতি এ-মাটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

বোড়ো-মেচ জনজাতি মঙ্গোলীয় জনগোষ্ঠীর অন্তর্গত। এই মঙ্গোলীয় জনজাতির আগমন সম্পর্কে গবেষক প্রত্নতত্ত্ববিদ্গণের কাছে জানা যায় বোড়ো-মেচ জনজাতি খ্রিস্টপূর্ব সহস্রাব্দের পূর্বেই ভারতবর্ষে প্রবেশ করেছিল এবং খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম থেকে চতুর্থ শতকের মধ্যেই হিমালয় পর্বতমালার দক্ষিণের ঢালু থেকে উত্তরপূর্ব ভারতে, বিহার সংলগ্ন নেপাল, অসম ও উত্তরবঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছিল। উত্তরবঙ্গে মূলত যে-চারটি জেলায় বোড়ো-মেচ জনজাতির বসবাস, সেটি হল—দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার। 

  

    প্রাচীন যুগ থেকে গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে জীবনযাপন করার ফলে নিজস্ব ‘বাথৌ’ ধর্ম যেমন গড়ে উঠেছে তেমনি সমাজের নতুন নতুন আচার-আচরণ, নীতি, বেশ-ভূষা, ভাষা এবং সংস্কৃতিও তৈরি হয়েছে। আমোদপ্রিয় এই বোড়ো-মেচ জনগোষ্ঠী বিভিন্ন পূজাপার্বণ, অনুষ্ঠান ও নাচ-গানের মধ্য দিয়ে তাঁদের আবেগকে নানা আঙ্গিকে তুলে ধরে। যেমন— নববর্ষ, কৃষি-জীবনের সুখ-দুঃখ, মৎস ও পশু শিকার, বিবাহ ও প্রেমগীত এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্যযোগ্য। উত্তরবঙ্গের বোড়ো-মেচ জনজাতি বর্তমানে বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নিজেদের লোকসংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা অনবরত চালিয়ে যাচ্ছে। আর এই উৎসব অনুষ্ঠানে তাঁরা একদিকে যেমন একে ওপরের সঙ্গে মিলিত হচ্ছে ঠিক তেমনি এই উৎসবকে কেন্দ্র করে বাৎসরিক নানা অনুষ্ঠান উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায়ই হয়ে থাকে। যেমন— ‘বোড়ো সাহিত্য সভা’, ‘বোড়ো কৃষ্টি আফাৎ’, ‘বৈশাগু ফৈস্টিভাল’  ইত্যাদি।

Downloads

Download data is not yet available.

References

১. চৌধুরী, দুলাল এবং পল্লব সেনগুপ্ত : লোকসংস্কৃতির বিশ্বকোষ, কলকাতা ৯, পুস্তক বিপণি, প্রথম প্রকাশ : ২০০৪, দ্বিতীয় সংযোজন : ২০১৩, পৃ. ২৮৫

২. দাশ, নির্মল : উত্তরবঙ্গের ভাষাপ্রসঙ্গ, কলকাতা ০৯, সাহিত্য বিহার, প্রথম প্রকাশ : জানুয়ারি ১৯৮৪,

পরিমার্জিত তৃতীয় সংস্করণ : অক্টোবর ২০১৬, পৃ. ১৪

৩. Chatterji, Suniti Kumar : Kirāta-Jana-Kṛti, Kolkata 01, The Asiatic Society, First Published in 1951, Fifth Reprint in January 2018, p. 46

৪. মহেশ চন্দ্র নার্জিনারী, বয়স ৭৩/৭৪ বৎসর। গ্রাম—উত্তর ছেকামারী, মাদারী হাট, আলিপুরদুয়ার। পেশা— বিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মী ছিলেন। বোড়ো সাহিত্য সভার সঙ্গে যুক্ত। বোড়ো-মেচ জনজাতির বিভিন্ন ধরণের গান, উত্তরবঙ্গের কোন কোন জেলায় বসবাস করে ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করা হয়। তথ্য সংগ্রহের তারিখ— ১৪.১২.২০১৮

৫. দাশ, নির্মল, পূর্বোক্ত, পৃ. ১৬

৬.https://universalinstitutions.com/languages-added-in-the-8th-schedule-of-indian-constitution/

৭. Chatterji, Suniti Kumar: Kirāta-Jana-Kṛti, January 2018, p. 22

৮. বিদ্যুৎ বসুমাতা, বয়স— ৫৪/৫৫ বছর। গ্রাম—ছিপরা, আলিপুরদুয়ার। পেশা—কৃষক। বোড়ো সাহিত্য চর্চা, গান, কবিতা, ছোটগল্পকার, এমনকি বাংলা সাহিত্য চর্চা করেন। বোড়ো সাহিত্য সম্পর্কে জানা যায়। তথ্য সংগ্রহের তারিখ— ২৫.১০.২০১৯

৯. চৌধুরী, দুলাল এবং পল্লব সেনগুপ্ত : পূর্বোক্ত, পৃ. ২৮৫

১০. সুবা, রমেশ চন্দ্র : বাথৌ ধর্ম্ম, আলিপুরদুয়ার, শহীদ মেশিং প্রেস, প্রথম সংস্করণ : ১লা জুন ২০০০ পৃ. ২

১১. রমেশ চন্দ্র সুবা, বয়স—৭৮/৭৯ বছর। গ্রাম—সাতালী, আলিপুরদুয়ার। পেশা—স্কুল শিক্ষক ছিলেন। বাঠৌ ধর্ম সম্পর্কে, বোড়োদের বসবাস সম্পর্কে আলোচনা হয়। তথ্য সংগ্রহের তারিখ—২৪.০৩.২০১৯

১২. সমেন্দ্র নার্জিনারী, বয়স—৫৪/৫৫ বছর। গ্রাম—বোলাডাবরি, আলিপুরদুয়ার। পেশা-রেল ডিপার্টমেন্ট। বোড়ো সংস্কৃতির একজন সমাজ সংস্কারক। বোড়ো-মেচ ভাষার সাহিত্য, পত্রপত্রিকা সম্পর্কে আলোচনা করেন। তথ্য সংগ্রহের তারিখ— ২০.০২.২০১৯

১৩. রায়, দীপককুমার: বাংলা ও বোড়ো ভাষা: একটি তুলনামূলক অধ্যয়ন, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, ২০০৬, পৃ. ২৫

১৪. Boro, Anil: Folk literature of The Boros: An Introduction, Guwahati-07, Adhunik

Prakashan, 1st Edition February 26, 2001, p. ৪৮

Downloads

Published

2021-01-01

Issue

Section

Articles

How to Cite

Uttarbanger Bodo-Mech Janajatir Lokaja Utsab o Palaparban/ উত্তরবঙ্গের বোড়ো-মেচ জনজাতির লোকজ উৎসব ও পালাপার্বণ. (2021). TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL, 1(1), 11-16. https://tirj.org.in/tirj/article/view/105