Vidyasagar in the light of Vidyasagarcharita: An unfinished autobiography/ ‘বিদ্যাসাগরচরিত’এর দর্পণে বিদ্যাসাগর : এক অসমাপ্ত আত্মজীবনী গ্রন্থ
Keywords:
- আত্মজীবনী,
- সংস্কৃতপাঠ,
- ইংরেজীশিক্ষা,
- চতুষ্পাঠী,
- অধ্যয়ন,
- সংস্কৃত কলেজ,
- জীবনীগ্রন্থ,
- সংস্কৃতশাস্ত্র,
- মালস্টোন
Abstract
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ‘বিদ্যাসাগরচরিত’ গ্রন্থটি তাঁর তিরোধানের অনেক আগেই রচনা করেছিলেন। তবু তিনি এই গ্রন্থটির রচনা সম্পন্ন করে যেতে পারেননি। তিনি এর দু’টি পরিচ্ছেদ মাত্র রচনা করেছিলেন। এই দু’টি পরিচ্ছেদের প্রথমটিতে তাঁর পূর্বপুরুষের বিবরণ এবং দ্বিতীয়টিতে তাঁর নিজের শৈশবকালের কথা লিপিবদ্ধ হয়েছে।
শারীরিক অসুস্থতা ও নানা ধরনের কাজে ব্যস্ত থাকার জন্য বিদ্যাসাগরের অনেক গ্রন্থ অসমাপ্ত অবস্থায় রয়ে গেছে। ‘বিদ্যাসাগরচরিত’ও এর ব্যতিক্রম নয়। বিদ্যাসাগর মহাশয় জীবনী রচনার পরেও দীর্ঘকাল বেঁচে ছিলেন। সেই কালের কথা তাঁর নিজের জীবনীতে লিপিবদ্ধ হয়নি। তাঁর আত্মজীবনীতে জীবনের দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত। পরবর্তীকালে তিনি সমাজের জন্য অনেক কাজ করে গেছেন। নারীশিক্ষা আন্দোলন এবং বিধবাবিবাহ আন্দোলনের তিনি পথিকৃৎ। কিন্তু তাঁর নিজের লেখা জীবনীতে এগুলি অনুপস্থিত।
বিদ্যাসাগর মহাশয় প্রায়শই তাঁর আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের কাছে নিজের জীবনের অনেক ঘটনার গল্প করতেন। এছাড়াও তিনি অনেক কাগজপত্র রেখে গেছেন। সেগুলিকে অবলম্বন করে তাঁর জীবনচরিত লেখা কিছু অসম্ভব ছিল না। কিন্তু জীবনচরিত নিজে লেখা আর অন্যের লেখার মধ্যে যে অনেকটা পার্থক্য তা আমরা সকলেই জানি। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পুত্র শ্রী নারায়ণচন্দ্র বন্দোপাধ্যায় তাঁর পিতা জীবনচরিত সম্পূর্ণ করে যেতে পারেননি বলে আক্ষেপ করেছেন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মৃত্যুর পরে ১৮৯১ সালে তাঁর পুত্র শ্রী নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পিতার রচিত অসমাপ্ত আত্মজীবনী ‘বিদ্যাসাগরচরিত’ নাম দিয়ে সংকলন করেছিলেন।
আমরাও মনে করি যে পরবর্তী সময়ে বিদ্যাসাগরের জীবনী গ্রন্থ যতই রচিত বা প্রকাশিত হোক না কেন, তার নিজের লেখনীতে নিজের জীবনী গ্রন্থ রচনার একটা স্বতন্ত্র মূল্য রয়েছে। কারণ অন্যের রচিত গ্রন্থ জীবনী গ্রন্থই হবে, আত্মজীবনী নয়। আর জীবনীগ্রন্থ ও আত্মজীবনী গ্রন্থের মধ্যে একটা সূক্ষ্ম পার্থক্য তো রয়েছেই। ঈশ্বরচন্দ্র তাঁর জীবনে আমাদের বাংলা সাহিত্যকে, আমাদের সমাজকে অনেক কিছুই দিয়ে গেছেন। তাঁর এই ঋণ পরিশোধ করার মতো নয়। কিন্তু যে আত্মজীবনী রচনায় তিনি হস্তক্ষেপ করেছিলেন, সেই কাজ তিনি সম্পূর্ণ করে যেতে পারেননি বলে আমাদের চিরদিনের জন্যই আক্ষেপ রয়ে গেল।
‘বিদ্যাসাগরচরিত’ এর প্রথম পরিচ্ছেদের শুরু হয়েছে বীরসিংহ গ্রামে ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মগ্রহণের ঘটনা দিয়ে। এই পরিচ্ছেদে প্রথমে পিতৃপক্ষের পূর্বপুরুষদের পরিচয় দেওয়ার পর ঈশ্বরচন্দ্র মাতৃপক্ষের পূর্বপুরুষদেরও পরিচয় দিয়েছেন। বিদ্যাসাগর মহাশয়ের পাঁচ বছর বয়সের সময়কাল থেকে ‘বিদ্যাসাগরচরিত’ এর দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের শুরু। এই দুটি পরিচ্ছেদে বিদ্যাসাগর মহাশয় তাঁর ঠাকুরদা রামজয় তর্কভূষণ ও তাঁর বাবা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবং নিজের জীবনের অনেক কথাই লিপিবদ্ধ করেছেন। সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক মধুসূদন বাচষ্পতির পরামর্শে ঈশ্বরচন্দ্রকে সংস্কৃত কলেজে ভর্তি করানো পর্যন্ত এসে আত্মজীবনী রচনায় বিদ্যাসাগরের লেখনী অবসর নিয়েছে। এই দুটি পরিচ্ছেদের এক অসমাপ্ত জীবনচরিতকে অবলম্বন করেই আমি আমার এই গবেষণাকর্মটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করেছি।
Downloads
References
১. বন্দ্যোপাধ্যায়, নারায়ণ, (সংকলিত), ‘বিদ্যাসাগরচরিত’, ভূমিকা
২. তদেব
৩. তদেব
৪. তদেব
৫. বন্দ্যোপাধ্যায়, নারায়ণ, (সংকলিত), ‘বিদ্যাসাগরচরিত’, প্রথম পরিচ্ছেদ, পৃ. ১
৬. তদেব, পৃ. ২
৭. তদেব, পৃ. ২-৩
৮. মুরশিদ, গোলাম, ‘বিদ্যাসাগর’, দ্রষ্টব্য: ‘বিদ্যাসাগর : সংস্কারক এবং শিল্পী’, সুনীলকুমার মুখোপাধ্যায়, পৃ. ৩৪
৯. বন্দ্যোপাধ্যায়, নারায়ণ, (সংকলিত), ‘বিদ্যাসাগরচরিত’, প্রথম পরিচ্ছেদ, পৃ. ০৭-০৮
১০. তদেব, পৃ. ০৯
১১. তদেব, পৃ. ১১
১২. তদেব, পৃ. ১২
১৩. তদেব, পৃ. ১২-১৩
১৪. তদেব, পৃ. ১৬
১৫. তদেব, পৃ. ২৬
১৬. তদেব, পৃ. ২৬
১৭. তদেব, পৃ. ২৭-২৮
১৮. বন্দ্যোপাধ্যায়, নারায়ণ, (সংকলিত), ‘বিদ্যাসাগরচরিত’, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ, পৃ. ৩০
১৯. তদেব, পৃঃ ৩৪।
২০. দে, বিশ্বনাথ, (সম্পাদিত), ‘বিদ্যাসাগর স্মৃতি’, দ্রষ্টব্য : ‘সাগর-তর্পণ’, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, পৃ. ৪
২১. বন্দ্যোপাধ্যায়, নারায়ণ, (সংকলিত), ‘বিদ্যাসাগরচরিত’, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ, পৃ. ৩৯
২২. তদেব, পৃ. ৪০
২৩. তদেব, পৃ. ৫০
২৪. তদেব, পৃ. ৫১
২৫. তদেব, পৃ. ৫১-৫২
২৬. বসু, বিমান, সম্পাদনা- ‘প্রসঙ্গ বিদ্যাসাগর’, দ্রষ্টব্য : ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ, ‘বিদ্যাসাগর চরিত’, পৃ. ৮২-৮৩

