Novelist Shankar and Contemporary Bengali Novel/ ঔপন্যাসিক শংকর ও বাংলা জনপ্রিয় উপন্যাস
Keywords:
- জনপ্রিয়তা,
- জনপ্রিয় উপন্যাস,
- পপুলার লিটারেচার,
- পাশ্চাত্যে জনপ্রিয়তা,
- বাংলা জনপ্রিয় উপন্যাস,
- জনপ্রিয়তার তাত্ত্বিকভিত্তি,
- শংকরের জনপ্রিয়তা ও সমকালীন অন্যান্য ঔপন্যাসিক
Abstract
এখন ‘জনপ্রিয়তা’ নিছক একটা ঘটনা নয়, উপন্যাসের একটি স্বতন্ত্র পরিভাষা। শংকরের বেশকিছু রচনাকে আমরা এই পর্যায়ে ফেলতে পারি। প্রথমেই আসে ‘কত অজানারে’ ও ‘চৌরঙ্গী’র নাম। প্রথম জীবনে লেখা এই দু’টি উপন্যাসের বিচারে মণিশংকর মুখোপাধ্যায় অবশ্যই একজন ‘জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক’ বা ‘পপুলার নভেলিস্ট’। পাশ্চাত্যে প্রথম-বিশ্বযুদ্ধ সমকালে উপন্যাসের দু’টি ধারা তৈরি হয়। একটি ‘জনপ্রিয়’ ধারা এবং অপরটি ‘সিরিয়াস’ উপন্যাসের ধারা। খুব নির্দিষ্ট করে বলা না গেলেও সমালোচকরা ১৯১৩ সালটিকে ধরে নিয়েছেন জনপ্রিয় উপন্যাসের জন্মলগ্ন হিসেবে। কারণ ফ্রান্সের ঔপন্যাসিক মার্সেল প্রুস্তের (১৮৭১-১৯২২) ‘আ লা রেশের্শ দুতঁ টেম্প পর্দু’ (In Search of Lost Time) উপন্যাসটি ঐ বছর প্রকাশিত হয়। যার মধ্যে জনপ্রিয়তার বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলো ফুটে উঠেছিল বলে সমালোচকরা মনে করেছিলেন। বাংলা সাহিত্যে ‘জনপ্রিয় উপন্যাস’-এর এই ধারণাটা এসেছে অনেক পরে। তাকে ঘিরে কিছু বিতর্কের অবকাশও তৈরি হয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতায় স্থিতিশীল পারিবারিক কাঠামোতে ভাঙন ধরলো। মানুষ হয়ে উঠলো সংশয়ী। আমরা বেঁচে আছি এটাই হয়ে গেল বিস্ময়! তাই এই সময়ের সিরিয়াস উপন্যাসের লেখকরা জোর দিয়েছেন মানুষের অন্তর্জীবনের ওপর। স্বাভাবিকভাবেই তাদের উপন্যাসশৈলীতে কিছু বদল এসেছে। বদলে যাওয়া সেই ধারার ফসল হল মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস (Psychological Novel), চেতনাপ্রবাহধর্মী উপন্যাস (Stream of Consciousness Novel), উদ্ভট উপন্যাস (Absurd Novel) ইত্যাদি। এই ধরনের উপন্যাসে আগা-মুড়ো-ল্যাজাবিশিষ্ট কোনো গল্প ছিল না। নিটোল গল্পের অভাবই সিরিয়াস উপন্যাসের মূল বৈশিষ্ট্য। ‘আসলে গল্প ব্যাপারটা খুবই জরুরী। কবি ভাবেন শব্দরূপ ও চিত্ররূপের ভিতর দিয়ে, নাট্যকার ভাবেন দৃশ্য চরিত্র। ঔপন্যাসিক ভাবেন গল্পের ভিতর দিয়ে। গল্প ও প্লট সাজানোয় চরিত্রগুলি শক্তি পায়। বক্তব্য দ্যুতি পায়। সবথেকে বড় কথা, ঠিকমতো বলা গল্প শুধু যে পাঠককে জানায় তাই নয়, তাকে ভাবায়ও বটে—ভিতরে ঢুকে পড়তে উত্তেজিত করে। আধুনিক বাংলা উপন্যাস তার সাক্ষী।’ এই ধারার পাশাপাশি আরও একটা উপন্যাসের ধারা আত্মপ্রকাশ করলো। যাকে আমরা ‘পপুলার স্ট্রিম’ (জনপ্রিয় ধারা) বলে চিহ্নিত করতে পারি। অনেকে আবার জনপ্রিয় ধারাকেই সাহিত্যের ‘মেন-স্ট্রিম’ (মূল-ধারা) বলবার পক্ষপাতী। বাংলা উপন্যাস সাহিত্যের ক্ষেত্রে এই ধারণাটা অনেকটা সঠিক। স্বাধীনতা-পরবর্তী পাঁচ দশকের বাংলা জনপ্রিয় উপন্যাস ও মূলধারার উপন্যাসকে আলাদা করা যাবেনা। এখানেই বাংলা জনপ্রিয় উপন্যাস, বেস্টসেলার উপন্যাস, শ্রেষ্ঠ উপন্যাস সব এক হয়ে গেছে। এমনকি শংকরের উপন্যাসও তার ব্যতিক্রম নয়।
Downloads
References
১. https://www.britannica.com/art/popular-literature
২. Victor E. Neuburg, Popular Literature : A History and Guide, The WOBURN Press, 1977, p. 301
৩. প্রশান্ত দত্ত সম্পাদিত, ‘আমার বর্ণমালা’ সাহিত্য পত্রিকা, তৃতীয় বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা, শারদীয়া সংখ্যা ২০২১, পৃ. ৪৩
৪. J. A. Cuddon, A Dictionary of Literary Terms And Literary Theory, A John Wiley & sons, Ltd., publication, 5th Edition 2013, p. 548
৫. সুমিতা চক্রবর্তী, উপন্যাস সৃষ্টি না উৎপাদন, সম্পাদক অশোককুমার সেন, কলকাতা, বারমাস পত্রিকা, শারদীয় সংখ্যা ১৯৯০, পৃ. ১০১
৬. তদেব, পৃ. ১০১
৭. ইন্দ্রাণী রুজ, জনপ্রিয় বাংলা উপন্যাস ও শংকরের চৌরঙ্গী, বঙ্গীয় সাহিত্য সংসদ, প্রথম প্রকাশ জুলাই ২০১৯, পৃ. ১১
৮. সুমন সেনগুপ্ত সম্পাদিত, ‘দেশ’ পত্রিকা, ‘কথা ও সাহিত্য’ বিশেষ সংখ্যা, ১৭ই জুলাই ২০১৮, পৃ. ১৬
৯. তদেব, পৃ. ১৭
১০. প্রশান্ত দত্ত সম্পাদিত, ‘আমার বর্ণমালা’ সাহিত্য পত্রিকা, তৃতীয় বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা, শারদীয়া সংখ্যা ২০২১, পৃ. ২৫
১১. শংকর, দুঃসময়ের দিনলিপি, দে’জ, কলকাতা ৭৩, প্রথম প্রকাশ জুন ২০২০, মুখবন্ধ অংশ
১২. প্রশান্ত দত্ত সম্পাদিত, ‘আমার বর্ণমালা’ সাহিত্য পত্রিকা, তৃতীয় বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা, শারদীয়া সংখ্যা ২০২১, পৃ. ৩৯
১৩. তদেব, পৃ. ২২
১৪. তদেব, পৃ. ১৬
১৫. তদেব, পৃ. ১৬
১৬. আমার বর্ণমালা, পৃ. ১৬
১৭. তদেব, পৃ. ২৩
১৮. তদেব, পৃ. ৩৩
১৯. আমার বর্ণমালা, পৃ. ৬
২০. দেশ, ৫ ভাদ্র, ১৪০৫ বঙ্গাব্দ, পৃ. ৩৫
২১. সমরেশ মজুমদার, গল্প উপন্যাসে অন্তর্জীবন, বঙ্গীয় সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, ২০১০, পৃ. ৩২২

