Published Paper Details:

NABANITA DEBSENER GALPA O UPANNYASER KAYEKJON KANNYA.

MANIDIPA DAS

পুরুষ ও নারীর অসাম্য, নারীস্বাধীনতা, কয়েকজন মেয়ের কাহিনি, আত্মদীপ-আত্মশরণ।

পুরুষ এবং নারীর সামাজিক অবস্থানের মধ্যে সাম্য কখনোই ছিল না। শুধুমাত্র ভারতবর্ষের সমাজে নয়। নানা দেশের ইতিহাসে নানা অধ্যায়ে বারে বারেই দেখা গেছে নারীদের অত্যাচারিত হ’বার ইতিবৃত্ত। মধ্যযুগের ইওরোপে স্বামীরা যুদ্ধে যাবার আগে স্ত্রীদের কোমরে পরিয়ে দিতেন চেস্টিটি বেল্ট। যুদ্ধ থেকে ফিরে এসে ঐ বেল্ট খুলতেন। স্ত্রী-র প্রতি অবিশ্বাসের চিহ্ন এ’টি, যদিও পুরুষের বিশ্বস্ততা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হ’ত না। এগুলি বাস্তব— কিন্তু সাহিত্যে অনেকসময়েই এই অসাম্যের প্রতিবাদ করা হ’ত। গ্রীক নাটক ‘মেদেয়া’তে স্বামী জেসনের অন্যায় কার্যকলাপের প্রতিবাদ করেছিলেন মেদেয়া। স্বামীকর্তৃক প্রবঞ্চিত হ’বার বেদনা তিনি নিশ্চুপে সহ্য করেননি বরং স্বামীর প্রিয় দুই পুত্রকে (যারা মেদেয়ারও পুত্র) হত্যা ক’রে নিষ্ঠুর প্রতিশোধ নিয়েছিলেন। অর্থাৎ, বাস্তবে অত্যাচারিত হওয়া এবং সাহিত্যে প্রতিবাদী হওয়ার উত্তরাধিকার বহু পুরাতন।

         এই প্রতিবাদের থিম অভিনব কিছু নয়। সাহিত্যিক অনেক সময়েই এই কাঠামোতে রক্তমাংস আরোপ ক’রে কাহিনি বয়ন করেন। সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এই থিম বাস্তবের সঙ্গে সম্পর্কিত বটে কিন্তু ঘটনার প্রতিক্রিয়া হয়তো সাহিত্যে ভিন্নভাবে চিত্রিত হয়। সাহিত্যে এরকমটা অনেকসময়ে দেখা যায়, যে, বিদ্যা এবং যোগ্যতায় নারী পুরুষের চেয়ে অগ্রসর অথচ পুরুষকর্তৃক গৃহীত কোনো সিদ্ধান্ত মান্য করার ফলে তার জীবন হ’য়ে যাচ্ছে এলোমেলো। কখনো দেখা যায়, যে, কোনো নারী সামাজিক অভিমতের বিরুদ্ধে কোনো যুক্তিসিদ্ধ মত পোষণ করছে এবং সে ক্রমশঃ ঘরে ও বাইরে কোণঠাসা হ’য়ে যাচ্ছে। এরা কেউই কিন্তু লড়াইয়ের ময়দান ছেড়ে পালাচ্ছে না, যেহেতু নঞর্থকতা সাহিত্যে প্রত্যাশিত নয়। অর্থাৎ মোদ্দা কথাটা এ-ই, যে, বাস্তবে হেরে যাওয়া নারীরা সাহিত্যে জিতে যাচ্ছেন। আবার এ সত্যটাও সামনে চলে আসছে যে, প্রথাবিরুদ্ধ পথে হাঁটতে গেলে দমনপীড়ন অবশ্য বরাদ্দ কী বাস্তবে, কি সাহিত্যে।  

         সমাজে যা কিছু ঘটতে থাকে, তা ক্রমশঃ সমাজতাত্ত্বিক ইতিহাসের পাতায় চলে যেতে থাকে। একইসঙ্গে তা বিক্রিয়া করতে থাকে সাহিত্যিকের মানসিক গবেষণাগারে, যেখান থেকে জন্ম নেয় প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদ পুরুষের কলম থেকে আসতে পারে, তবে নারীরা লেখনী থেকে তা আরো ব্যাপ্ত এবং গভীর চেহারায় আসা সম্ভবপর। আর সাহিত্যিক নারী বা পুরুষ যাই-ই হোন, এই প্রতিবাদ করাটা তাঁর অবশ্যকর্তব্য। ‘ন্যায়ের বিজয়’কে পরিস্ফুট করে তোলবার নৈতিক দায়িত্ব সাহিত্যিকের আছে। সেই প্রতিবাদগুলিকেই বিশ্লেষণ ক’রে নবনীতা দেবসেনের লেখায় উপস্থিত কয়েকটি কন্যার বিষয়ে একটি ধারণা তৈরী করবার চেষ্টা করা হয়েছে।

Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL

Paper ID : tirj/ October 22/article-14

Page No : 116-123

Published In :Volume 2, Issue 4

DOI (Digital Object Identifier) : 

E ISSN : 2583-0848

Creative Commons Attribution 4.0 International License