Published Paper Details:

NIRBACHITO GOLPER ALOKE PRACHET GUPTER HASYARASATTYAK GOLPER SWARUP SANDHAN.

SUBINOY DAS

হাস্যরস, বাংলা সাহিত্যে হাস্যরস, প্রচেত গুপ্ত, হিউমারধর্মীগল্প, উইট, নির্মল হাস্যরসাত্মক্ গল্প, তুলনামূলক আলোচনা।

মানব জীবনের অন্যতম প্রবৃত্তি হাস্যকে কেন্দ্র করে বহু তাত্ত্বিক আলোচনা হয়েছে৷ হাসির সংজ্ঞা, শারীরতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য, হাসির কারণ, প্রভাব, মনস্তত্ত্ব, সামাজিকতা ইত্যাদি বিবিধ প্রসঙ্গ সেখানে স্থান পেয়েছে৷ এই বহুমাত্রিকতার বিশ্লেষণের মাধ্যমে হাসির স্বরূপ ব্যাখ্যাত হয়েছে৷ সাহিত্যিকরাও হসিকে অবলম্বন করে তাঁদের সৃষ্টিকর্মে হাস্যরস পরিবেশন করে পাঠককে আনন্দ প্রদান করেছেন৷ এই হাস্যরসকে কেন্দ্র করেও তাত্ত্বিকদের আলোচনা জমে উঠেছে-- প্রাচ্যে, পাশ্চাত্যে৷ বলাবাহুল্য হাস্যরসাত্মক সাহিত্যবিচারে তার মূল্য অনস্বীকার্য৷ বাংলা-সাহিত্যের সৃষ্টি পর্ব থেকেই রচনার মধ্যে হাস্যরসের পরিচয় পাওয়া যায়— প্রাচীন-মধ্যযুগ পেরিয়ে আধুনিক যুগে তা আরও বলিষ্ঠ রূপে প্রকাশ পেতে থাকে৷ ঈশ্বরগুপ্ত, ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কালীপ্রসন্ন সিংহ, দীনবন্ধু মিত্র, ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, প্রমথ চৌধুরী, কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়, রাজশেখর বসু, সুকুমার রায়, শিব্রাম চক্রবর্তী প্রমুখ বহু সাহিত্যিকের রচনায় হাস্যরসের দ্যুতি লক্ষ করা যায়৷ বলা বাহুল্য এদের সাহিত্য রচনার সময়কাল উনিশ থেকে বিশ শতকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ৷ একবিংশ শতকে দাঁড়িয়ে এই ধারাটির হাল হকিকত অনুসন্ধান করতে গিয়ে যাদের নাম উঠে আসে কথাসাহিত্যিক প্রচেত গুপ্ত তাঁদের মধ্যে অন্যতম৷ তিনি নিজেই কিছু হাস্যরসাত্মক গল্পের সঙ্গে বিভিন্ন গল্পগ্রন্থে ছড়িয়ে থাকা হাসির গল্প বেছে নিয়ে ‘বাছাই করা হাসি’ নামে একটি হাস্যরসাত্মক গল্পের সংকলন প্রকাশ করেছেন৷ উক্ত গ্রন্থের বেশ কয়েকটি গল্পের মাধ্যমে তাঁর হাস্যরস রসিকতার স্বরূপ উন্মোচন করা হয়েছে৷ গ্রন্থটির প্রথম গল্প ‘বসন্ত জাগ্রত কাকে’ একটি হিউমারধর্মী  রচনা৷ সমাজের অন্ধকারাচ্ছন্ন দিক- বিত্তবান মানুষের ঘুষ খাওয়া এবং বিপদে পড়ে নাকানিচোবানি খেয়ে অনুশোচনার জাগরণের মাধ্যমে হাস্যরস পরিবেশিত হয়েছে৷ লেখকের আর্থ-সমাজসচেতন মানসিকতা এবং হাস্যরসের মাধ্যমে তাকে প্রকাশ করবার বৈশিষ্ট্য এখানে লক্ষ করা যায়৷ আবার তাঁর ‘মানুষ চেনা কঠিন’ গল্পে বুদ্ধিদীপ্ত হাস্যরসের পরিচয় পাওয়া যায়৷ নৈতিক চরিত্রের অসঙ্গতি লেখক বুদ্ধিদীপ্ত কৌশলে প্রকাশ করেছেন৷ তেমনি আবার ‘রুটি’, ‘রাজার পার্ট’, ‘ভূদের স্যারের ভুল’ এবং ‘নাটক’ ইত্যাদি গল্পগুলির মধ্যে দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন অসঙ্গতিকে অবলম্বন করে হাস্যরস পরিবেশন করেছেন যার মধ্যে রয়েছে নিছকই মজা-নির্মল আনন্দ৷ উক্ত গল্পগুলির নিরিখে দেখা যায়, ব্যঙ্গধর্মী আক্রমণাত্মক প্রবণতা লেখকের বৈশিষ্ট্য নয়--হাস্যরস পরিবেশনে তিনি পূর্ববর্তী প্রভাতকুমার, কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায়েরই ধারানুসারী৷ সময়, রুচি এবং যুগের বদলের সঙ্গে সঙ্গে রচনার স্থান-কাল-পাত্র বদলে গিয়ে নতুন যুগের সামাজিক, ব্যক্তিক অসঙ্গতি তাঁর রচনায় স্থান করে নিয়েছে৷ এখানেই তাঁর কৃতিত্ব৷

Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL

Paper ID : tirj/ April23/article-11

Page No : 77-88

Published In :Volume 3, Issue 2

DOI (Digital Object Identifier) : 

E ISSN : 2583-0848

Creative Commons Attribution 4.0 International License