Published Paper Details:
ANIL GHARAIYER ‘NUNBARI’: AK NIMNYA BARGIYA NARIR JIBON SANGRAAM.
GOBINDA ROY
নিম্নবর্গ, অনিল ঘড়াই, বাংলা সাহিত্যে নিম্নবর্গ, নুনবাড়ি, নিম্নবর্গীয় নারী, জীবন সংগ্রাম।
নিম্নবর্গ শব্দটি ইতালীয় কমিউনিস্ট নেতা ও দার্শনিক আন্তোনিও গ্রামশি ব্যবহৃত ‘Subaltern’-এর বাংলা প্রতিশব্দ বলে ধরা হয়। ‘Subaltern Studies’ এর অন্যতম পথিকৃৎ রণজিৎ গুহ ‘নিম্নবর্গের ইতিহাস’ শীর্ষক আলোচনায় এ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন। তিনি সেখানে ভারতীয় প্রেক্ষিতে ও তার জনসংখ্যাতত্ত্বের নিরিখে দুটি বর্গের উল্লেখ করেছেন। একটি উচ্চবর্গ, অন্যটি নিম্নবর্গ। ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষে সমগ্র জনসংখ্যা থেকে এই উচ্চবর্গকে বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে তারাই নিম্নবর্গ। যে শৃঙ্খল সার্বিকভাবে তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেই শৃঙ্খল থেকে মুক্তিলাভই হচ্ছে নিম্নবর্গীয় চেতনাবাদের মূল কথা।
বাংলা ভাষা ব্যবহারকারী জনগোষ্ঠীর শ্রেণিবিন্যাস ও সমাজ কাঠামো, উৎপাদন বৈচিত্র্য, অর্থনৈতিক অবস্থানের বিভিন্নতায় বাংলা উপন্যাসের বিষয় হিসেবে স্বাভাবিক ভাবে উঠে এসেছে নিম্নবর্গ মানুষের জীবন সংগ্রাম ও সমাজ-সংস্কৃতির রূপ বৈচিত্র্য। প্রাচীন বাংলা সাহিত্যের চর্যাপদ থেকে শুরু করে মধ্যযুগের ভিতর দিয়ে আধুনিক সাহিত্যের অঙ্গনে শবর, চণ্ডাল, মুচি, ডোম, জেলে, ভিক্ষুক, মাঝি প্রভৃতি নানা বর্ণ-ধর্ম-কর্মের সঙ্গে সম্পৃক্ত মানুষের পরিচয় পাওয়া যায়। যদিও প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় সাহিত্য ছিল মূলত কাব্যসাহিত্য।
বাংলা কথাসাহিত্যে অনিল ঘড়াই অতি পরিচিত নাম। তাঁর জন্ম ১৯৫৭ সালের ১ নভেম্বর পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা থানার অন্তর্গত রুক্মিণীপুর গ্রামের একটি নিম্নবর্গীয় সমাজের পরিমণ্ডলে। অনিল ঘড়াই-এর শতাধিক গল্প ও কুড়িটির বেশি উপন্যাসের প্রেক্ষাপটে বিবৃত হয়েছে দলিত ও অন্ত্যজ জীবনের ইতিহাস।
অনিল ঘড়াই-এর প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস ‘নুনবাড়ি’ (১৯৯১)। ঔপন্যাসিক অনিল ঘড়াই ‘নুনবাড়ি’ উপন্যাসে মেদিনীপুরের নুনমারা সম্প্রদায়ের একটি পরিবারের জীবন সংগ্রামকে উপন্যাসে রূপ দিতে গিয়ে গোটা একটা সমাজকে তুলে ধরেছেন, যে সমাজে সাধারণ মানুষদের জীবিকা হল – খেয়া বাওয়া, কবিয়াল, ডাকাতি, নুন তৈরি, চা বিক্রি, বেশ্যাবৃত্তি, যাত্রাগান, যাত্রাদলে বাঁশি বাজানো প্রভৃতি। যাদের সঠিকভাবে খাবার জোটে না, দু-বেলা পান্তভাত খেয়ে জীবন কাটাতে হয়। বিয়ের পর বেশিরভাগ মেয়েকে মদো-মাতাল স্বামীর অত্যাচারে বিতাড়িত হতে হয়। এরূপ একটিসমাজব্যবস্থাকে এই উপন্যাসের প্রেক্ষাপটে খুঁজে পাওয়া যায়। স্বামীর ঘর ছেড়ে বাপের বাড়িতে থাকলেও সেখানে নানা পুরুষের প্রলোভনে পড়তে হয়, এমনকী গ্রাম প্রধানও স্বামী খেদানো মেয়ের প্রতি কুদৃষ্টি ও প্রলোভন দেয়। যে সমাজে মেয়েদের যৌনক্ষুধা মেটাতে গিয়ে পেট হয় এবং পাপ ঢাকতে পেট ধসাতে হয় এমন একটি পঙ্কিল সমাজে লবঙ্গ নামের একটি মেয়ের একক প্রচেষ্টায় সমাজের এহেন পঙ্কিল আবর্ত থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর কাহিনি এই উপন্যাস।
Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL
Paper ID : tirj/ April23/article-25
Page No : 174-179
Published In :Volume 3, Issue 2
DOI (Digital Object Identifier) :
E ISSN : 2583-0848