Published Paper Details:

Dhrupadi Loko-nattye Na Nari, Na Purush, Na Kimpurush Manusher Upasthapan : Mayamridanga (1972).

Anwesha Biswas 

বাংলা কথাসাহিত্যিক, মায়ামৃদঙ্গ, পুরুষ, আলকাপ, ছোকরা, চণ্ডীদাসী প্রেম

বাংলা কথাসাহিত্যের ইতিহাসে সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ এক উল্লেখযোগ্য নাম। তাঁর ‘মায়ামৃদঙ্গউপন্যাসটি রচিত হয়েছিল ১৯৭২ সালে। লেখক নিজেই বলেছেন, “আমার এ বই উপন্যাস এবং মূলয় অর্ধনারীশ্বর বিষয়ক, তত্রাচ অকপটে প্রকৃত তথ্যজ্ঞাপক।” ১ এ উপন্যাসে এক ‘বিরল মায়া’-র কথা প্রায় সবিস্তারে বিন্যস্ত। এই ‘বিরল মায়া’ হল আলকাপ’ দলের নায়িকা ‘ছোকরা’। ১৯৬০-৬১ সালে লোকসংস্কৃতি জগত থেকে মুছে যাওয়া এই লোকনাট্যের আঙ্গিকটি পদ্মা-গঙ্গা-অজয়-ময়ূরাক্ষীর এপারওপার যোজনবিস্তৃত অববাহিকায় গ্রামগঞ্জে হাট, মেলায়, উৎসবে-নিরুৎসবে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। লেখকের বয়ানে, “এই অত্যাশ্চর্য এবং ধ্রুপদী লোকনাট্যরীতির জনপ্রিয়তা লোকসমাজে শ্রেষ্ঠতম। আবার বলছি শ্রেষ্ঠতম।”২ আলকাপকথাটির প্রকৃত অর্থ- আমোদপ্রমোদমূলক নাটিকা। তবে কথাটির অর্থব্যঞ্জনা (Conotation) বিস্তারে এই অর্থও ব্যক্ত- রঙ্গরসাত্মক নাটিকাবা রঙ্গব্যাঙ্গাত্মক নাটিকা।৩ আলকাপ’- এর পটভূমিতে লেখা মায়ামৃদঙ্গউপন্যাসের”৪ দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকায় লেখক জানিয়েছেন, উপন্যাসটি “একাধারে আত্মজৈবনিক ও ডকুমেন্টারি।”৫ লেখক প্রথম সংস্করণের ভূমিকাতে জানিয়েছেন, “তত্রাচ অকপটে প্রকৃত তথ্যজ্ঞাপক!” অর্থাৎ এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে ভারতের গ্রামবাংলায় আলকাপদলের অস্তিত্ব ছিল সাড়ম্বরে এবং সেখানে এক বিরল মায়াও ছিল। আর সে বিরল মায়া হল নাচিয়ে ছোকরা। যারা মূলত ছিল অর্ধনারীশ্বর’, অর্থাৎ না নারী, না পুরুষ, না কিম্ পুরুষ- সে এক অমর্ত্য মায়া। ছোকরা সম্বন্ধে ওস্তাদ ঝাঁকসার স্পষ্ট মন্তব্য, “রাত্রির শোভা চাঁদ আর আলকাপের শোভা এই ছোকরা। পুরুষ- তবু পুরুষ নয়, নারী-তবু নারীও না।”৬ ছোকরারা জৈবিক লিঙ্গ বা জন্মগত যৌনচিহ্নে পুরুষ। কিন্তু সামাজিক লিঙ্গ বা সমাজ নির্ধারিত পোষাক পরিচ্ছদ, চলন, বলন, আচরণে নারী। ছোকরার এই সামাজিক লিঙ্গ তার ব্যক্তিগত ইচ্ছানির্ভর নয়। আলকাপদলের ওস্তাদ নিজ হাতে একটু একটু করে গড়ে তোলেন এদের। দলে নাচ, গানের জন্য প্রয়োজন হয় নারীর। কিন্তু দলের আর পাঁচ-সাতজন পুরুষের সঙ্গে একজন নারীর সর্বত্রগমন ও সর্বদা অবস্থানগ্রহণ সম্ভব নয় বলেই দলে নারী রাখা হয় না। নারী তৈরি করা হয় একজন পুরুষকে। আচরণে সে নারী, কিন্তু শরীরে সে পুরুষ। অন্যান্য পুরুষের চোখে মায়ার মতো ঠেকে তাকে। এ এক অধরা মায়া। ধরতে গেলে দেয় না ধরা। রক্তমাংসের নারীর চেয়ে এদের দর অনেক বেশি আলকাপের দলে।

Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL

Paper ID : tirj/July/21/article-4

Page No :  25 – 31

Published In :Volume 1, Issue 3, July 2021

DOI (Digital Object Identifier) : 

E ISSN : 2583-0848

Creative Commons Attribution 4.0 International License