Published Paper Details:

BISWA JUDDHA ABEG O BASTABATAR DANDHYA: PRASANGA MOKKHYADAMINI MUKHOPADHYAYER KALYAN-PRADIP.

TIRTHANKAR MANDAL

কল্যাণ-প্রদীপ, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, ইংল্যান্ড-তুরস্ক যুদ্ধ, যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীর চিঠি, যুদ্ধবিরোধী মানবিক বয়ান

বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সংক্রান্ত সাহিত্য এবং আলোচনার সংখ্যা খুবই কম। মোক্ষদায়িনী মুখোপাধ্যায়ের ‘কল্যাণ-প্রদীপ’ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিকে অবলম্বন করে রচিত জীবনী গ্রন্থ। আশি বছর বয়সী বৃদ্ধা দিদিমা তাঁর নাতি কল্যাণকুমার মুখার্জির জীবনকাহিনিকে গ্রন্থবদ্ধ করেছেন। কল্যাণকুমার বিলেত থেকে ডাক্তারি পাশ করে দেশে ফিরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় শাসক ইংরেজদের হয়ে যুদ্ধকালীন ডাক্তার হিসাবে ইংল্যান্ড-তুরস্ক যুদ্ধে যোগ দেয়। শেষ পর্যন্ত যুদ্ধবন্দী অবস্থায় রোগীর সেবা করতে করতেই টাইফয়েড রোগাক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার।

মোক্ষদায়িনী তাঁর এই নাতির জীবনকাহিনীকে শুধুমাত্র জীবনীর গণ্ডীতে সীমাবদ্ধ রাখেননি। জীবনের ঘটনাপঞ্জি বর্ণনাকে অতিক্রম করে প্রথমে বাংলার অতীত-বর্তমান ইতিহাস বিশ্লেষণ করেছেন ও সেইসঙ্গে পারিবারিক ইতিহাস ও জীবনবৃত্তান্তকে জুড়ে ব্যাখ্যা করেছেন। সবশেষে কল্যাণের যুদ্ধযাত্রা অনুসরণ করে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে ইংল্যান্ড-তরস্ক যুদ্ধের বর্ণনা করেছেন তিনি। বর্তমান প্রবন্ধে আমাদের মূল আলোচনা এই যুদ্ধবর্ণনা, তার পরিকল্পনা এবং গ্রন্থমধ্যে প্রকাশিত যুদ্ধসংক্রান্ত বাস্তবতার স্বরূপ নিয়ে।

ইতিহাস-সচেতন মোক্ষদায়িনী দেশের যুবসমাজকেও ইতিহাস, রাজনীতি, সমাজ বাস্তবতার বিষয়ে সচেতন করতে চেয়েছেন। দীর্ঘ অধ্যাবসায়ে নানান সূত্র থেকে তথ্যসংগ্রহ করে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সেগুলিকে যুদ্ধবর্ণনার ক্ষেত্রে যুক্তিগ্রাহ্য ও বাস্তবসম্মতভাবে সজ্জিত, গ্রথিত করেছেন মোক্ষদায়িনী। যুদ্ধবর্ণনার সময় ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পটভূমি যেমন বিশ্লেষণ করেছেন, তেমনই ভৌগোলিক বা প্রাকৃতিক বিষয়ের বিশ্লেষণাত্মক বর্ণনাও কল্যাণ-প্রদীপ গ্রন্থটিকে সারবান করে তুলেছে।

তবে যে বিষয়টি এই গ্রন্থের যুদ্ধবর্ণনাকে অনন্যতা এনে দিয়েছে তা হল চিঠির ব্যবহার। যুদ্ধক্ষেত্র থেকে কল্যাণকুমারের পাঠানো অনেকগুলি চিঠি পাঠানোর তারিখ এবং স্থান সহ সরাসরি উদ্ধৃত করেছেন মোক্ষদায়িনী। আর সেই চিঠিগুলি থেকে যুদ্ধের গতিপ্রকৃতির পাশাপাশি যুদ্ধক্ষেত্রে সরাসরি অংশগ্রহণকারীর মানবিক বয়ান তুলে ধরেছে আমাদের সামনে। যুদ্ধক্ষেত্রের আভ্যন্তরীণ ভয়াবহতা, মৃত্যুস্রোত, কাতরোক্তি ইত্যাদি স্পষ্টভাবে সামনে এসে পড়েছে এই চিঠিগুলির মাধ্যমে। বাইরে থেকে নির্মিত যুদ্ধবিষয়ক আবেগ, রোমান্টিকতার বিপরীতে শান্তিকামী, যুদ্ধবিরোধী মানবিক বয়ান কল্যাণ-প্রদীপ গ্রন্থের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে।

মোক্ষদায়িনীর গ্রন্থরচনার উদ্দেশ্য ছিল দেশের ভগ্নোদ্যম যুবকশ্রেণিকে উৎসাহিত করা। চিঠির মাধ্যমে প্রকাশিত যুদ্ধের প্রত্যক্ষদর্শীর মানবিক বিবরণ গ্রন্থরচনার সেই উদ্দেশ্যকে ব্যর্থ করেছে। আর এই আপাত ব্যর্থতাই বিশ্বযুদ্ধের বাস্তবিক বয়ান হিসাবে গ্রন্থটিকে সার্থক করে তুলেছে।

Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL

Paper ID : tirj/April/22/article-5

Page No : 38 – 45

Published In :Volume 2, Issue 2, April 2022

DOI (Digital Object Identifier) : http://doi.one/10.1750/TIRJ.30395 

E ISSN : 2583-0848

Creative Commons Attribution 4.0 International License