Published Paper Details:
MURSHIDABAD ZELAR NATTYA CHARCHA : EKTI SARBIK PARZALOCHANA.
SUBIR DEBNATH
মুর্শিদাবাদ, সামন্তরাজা, নাট্যবিদ্যালয়, পেশাদার নাট্যগোষ্ঠী, গণনাট্য, গ্রুপ থিয়েটার, স্বর্ণযুগ, নাট্যকার
আধুনিক বাংলা নাটকের পথচলা শুরু হয়েছিল ব্রিটিশদের হাত ধরে। তারা অত্যন্ত বিলাসী ও বিনোদন প্রিয় একটি জাতি। তাই স্বাভবিক ভাবেই তারা থিয়েটারের প্রতি ছিলেন অত্যন্ত অনুরাগী। তারা যেখানেই যেতেন সেখানেই বিনোদনের জন্য থিয়েটার নির্মাণ করে নাটক অভিনয়ের ব্যবস্থা করতেন। যেহেতু মুর্শিদাবাদ জেলা থেকেই তাদের শাসন ক্ষমতার পত্তন হয়েছিল, তাই স্বাভাবিক কারণে অনুমান করতে অসুবিধে হয় না যে মুর্শিদাবাদ জেলাতেও থিয়েটার নির্মাণ তারা করেছিলেন। এই অনুমানের ভিত্তিতে প্রমাণও মেলে। ১৮২০ সালে বহরমপুরের সেনানিবাসে মুর্শিদাবাদ জেলার প্রথম রঙ্গমঞ্চের দেখা মেলে। কলকাতার নাট্য ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাবো ব্রিটিশরা যে আধুনিক নাট্যবৃক্ষের বীজ বপন করেছিল সেই বৃক্ষটিকে লালন-পালন করে, বহু যত্নে মহীরুহে পরিণত করেছিলেন দেশীয় সামন্তরাজারা। মুর্শিদাবাদ জেলার নাট্যচর্চাও কলকাতা নাট্যচর্চার অনুরূপ সামন্তরাজাদের অঙ্গনে পালিত হয়েছে। এই জেলার প্রথম সখের থিয়েটারের দেখা মেলে ১৮৫৯ সালে কান্দি রাজবাড়িতে। যদিও সেটি স্থায়ীত্ব লাভ করেনি। উদ্বোধক বিদ্যাসাগরের পরামর্শের সেটি বিদ্যালয়ে পরিণত হয়। এরপর নিমতিতা জমিদার বাড়ির ‘হিন্দু থিয়েটার’, কাশিমবাজার রাজবাড়ির নাটকের স্কুল এটিই সম্ভবত দেশের প্রথম নাট্যবিদ্যালয়, এছাড়াও জেলাঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্তের জমিদাররা নাট্যচর্চায় ব্রতী হয়েছিলেন। এরপর বিংশ শতকের প্রথমদিকেই বহরমপুর শহরে পেশাদার নাট্যগোষ্ঠী গড়ে উঠতে শুরু করে। এই সময় থেকেই ধীরে ধীরে মুর্শিদাবাদ জেলার নাটক সামন্তরাজাদের অঙ্গন থেকে মুক্তি পেতে থাকে। পরবর্তী সময়ে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের হাতিয়ার হিসেবে বাংলা নাটকের ব্যবহার গোটা দেশ জুড়েই শুরু হয়। গণনাট্যের আন্দোলন এই জেলাতে স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই ছিল, কিন্তু স্বাধীনতার আগের মুর্শিদাবাদ জেলা গণনাট্য শাখা গড়ে উঠতে দেখা যায়নি। স্বাধীনতার পর, ১৯৫১ সাল থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত গণনাট্যের মুর্শিদাবাদ জেলা শাখা তাদের নাট্যধারা অব্যাহত রেখেছে। তবে মুর্শিদাবাদের নাট্যচর্চায় জোয়াড় আসে ষাটের দশক থেকে। এই সময়পর্বে গোটা জেলা জুড়েই একের পর এক উচ্চমানের নাট্যদল গড়ে উঠতে থাকে। যেমন- ‘রূপশিল্পী’, ‘প্রান্তিক’, ‘যুগাগ্নি, ‘ছন্দিক’, ‘ঋত্বিক’, ‘নাট্যম বলাকা’, ‘ঝড়’ প্রভৃতি। এইসকল নাট্যদলকে কেন্দ্র করে বেশকিছু নাট্যকারদের আবির্ভাব ঘটে, যেমন- সুধীন সেন, কমল সমাজদার, অঞ্জন বিশ্বাস, দিব্যেশ লাহিড়ী, শক্তিনাথ ভট্টাচার্য, পম্পু মজুমদার, গৌতম রায়চৌধুরী, দুলাল চক্রবর্তী, কৌশিক রায়চৌধুরী প্রমুখ। তবে একবিংশ শতকের প্রথম থেকেই এই অধিকাংশ নাট্যদল ভেঙে বা অচল হতে থাকে পাশাপাশি বহু নতুন নাট্যদলও প্রতিষ্টিত হতে থাকে। নতুন নাট্যকারদেরও আগমন ঘটেছে। ষাটের দশকের সেই স্বর্ণযুগ এখন না থাকলেও মুর্শিদাবাদের নাট্যচর্চা গৌরবের সাথেই অব্যাহত রয়েছে।
Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL
Paper ID : tirj/July/22/article-55
Page No : 495-503
Published In :Volume 2, Issue 3, July 2022
DOI (Digital Object Identifier) :
E ISSN : 2583-0848