Published Paper Details:
LABAN SHRAMIKDER JIBON SANGRAMER AKATHITA ANTRABAYAN : PRASANGA ‘LABANAKTA ‘ UPANNYASH.
JADAB MURARI
লবণ শ্রমিক, সত্যাগ্রহ আন্দোলন, ত্রিভুবন, কচ্ছের রণ, ব্রিটিশ, আজাদ, লবণ কর।
জলই জীবন। এই জল থেকে সৃষ্ট লবণ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের মধ্যে জলের পরেই তার স্থান। এই লবণ ছাড়া সব খাবারই স্বাদহীন। আবার লবণ মানব শরীরে আয়োডিনের জোগান দেয়। তাই লবণ আমাদের জীবন ধারার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। অথচ অতিপ্রয়োজনীয় এই লবণ উৎপাদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের কোন খোঁজ খবর আমরা কোনদিন রাখিনা। সমাজসচেতন প্রশাসক, নিম্নবর্গ শ্রেণির সমীক্ষক ও প্রখ্যাত কথাকার অনিতা অগ্নিহোত্রী গুজরাট রাজ্যের কচ্ছের রণ অঞ্চলের লবণ শ্রমিকদের দুর্বিষহ জীবনের কথা ঐতিহাসিক পটভূমিতে তুলে ধরেছেন ‘লবণাক্ত’ (২০২২) উপন্যাসে। দুই কালপর্বের ঘটনাবৃত্ত— এক ব্রিটিশ শাসনকাল, অপরটি বর্তমান সময়; এই দুই সময়ের লবণ শ্রমিকদের জীবনযুদ্ধের নানান খুঁটিনাটি তথ্য উঠে এসেছে এই উপন্যাসে। স্বাধীনতাপূর্ব কালে বিষ্ণুরাম, মালতী, উমেশ, গনেশদের লবণ উৎপাদনের অনেক আগে থেকেই কোলি, মিয়ানা, সান্ধি গোষ্ঠীর আগারিয়ারা রণ অঞ্চলে এ কাজ করতো। রণ অঞ্চলে কূপ খনন করে যে জল উত্তোলন করা হত তা সমুদ্রের জলের চেয়ে প্রায় ছয় গুণ বেশি লবণাক্ত ছিল। পূর্বপুরুষদের ও তাদের প্রতিবেশীদের পেশা অনুসরণ করে ত্রিভুবন আগারিয়ারা ব্রিটিশ ভারতে লবণ চাষে নিযুক্ত ছিল। এই চাষ করে তারা খুব স্বচ্ছলভাবে না হলেও স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ব্রিটিশদের ছলচাতুরতায় নিষ্কর লবণ উৎপাদনের উপর কর ব্যবস্থা চালু হলে শ্রমিকদের জীবনে নেমে এসেছে ঘোর অন্ধকার। ফলে খারাগোড়ার মত লবণ গ্রামে মালতী-বিষ্ণুরামদের পরিবার অনটনের আবর্তে ঢাকা পড়ে যায়। গুজরাটের সুরেন্দ্রনগর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল লবণ চাষের আদর্শ ভূমি। এই অঞ্চলে বাইরে থেকে বহু পরিযায়ী শ্রমিক লবণ চাষ করতে আসত। কালক্রমে তারা পুরোপুরি এই পেশার সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় এবং স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করে। যখনই ব্রিটিশরা ব্যবসায়িক মনোভাবের সঙ্গে শাসক মনোভাব যুক্ত করেছে তখনই তারা অর্থ লোলুপতার খেলায় মেতে উঠেছে। লবণ আইনের মত জঘন্য একটি আইন কার্যকর করে ব্রিটিশরা লবণ চাষের একচ্ছত্র অধিকার গ্রহণ করে নিয়েছে নিজেদের হাতে। এর পরিণাম হয়েছে ভয়ানক; সাধারণ লবণ শ্রমিকরা লবণ চাষ করে উপযুক্ত পারিশ্রমিক বা মূল্য কোনটাই না পেলেও কর প্রদান করতে বাধ্য থাকত শাসকের কাছে। এমনকি এই আইন মোতাবেক ব্রিটিশরা ছাড়া অন্য কেউ লবণ চাষ করতে পারবে না। গান্ধীজির নেতৃত্বে সত্যাগ্রহ আন্দোলন হলে ত্রিভুবনের মত বহু লবণ শ্রমিক নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য সক্রিয় হয়ে ওঠে। বছরের আট মাস নির্মমভাবে কায়িক পরিশ্রম করে আগারিয়ারা লবণ উৎপাদন করলেও কালক্রমে তাদের অধিকার লুপ্ত হয়ে যাচ্ছিল। একবিংশ শতকের বর্তমান সময়ে লবণ শ্রমিকদের দুর্দশার কথা আজাদরা উপলব্ধি করেছে ঠাকুরদা ত্রিভুবন, পিতা রাম সিং-এর দুর্বিষহ জীবনের পুনরাবৃত্তিতে। বাস্তববাদী ঔপন্যাসিক অনিতা অগ্নিহোত্রী ‘লবণাক্ত’ (২০২২) উপন্যাসে গুজরাটের ডান্ডির সত্যাগ্রহ আন্দোলনের ঐতিহাসিক ভাবনার অবতারণা করলেও এর পশ্চাতে তুলে ধরেছেন বর্তমান ও অতীতের লবণ শ্রমিকদের জীবনযন্ত্রণার নির্মম কাহিনি।
Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL
Paper ID : tirj/ October 22/article-18
Page No : 142-151
Published In :Volume 2, Issue 4
DOI (Digital Object Identifier) :
E ISSN : 2583-0848