Published Paper Details:

SHIKKHYA CHINTAY RABINDRANATH O VIVEKANAND : EKTI TULONATTYAK PARJABEKKHON.

SHUBHANKAR CHATTERJEE 

জনশিক্ষা, চরিত্রগঠন, আত্মকর্তৃত্ব, মাতৃভাষা, মনুষ্যত্ব, স্বনির্ভর, কর্তাভজা, বাংলা বিশ্ববিদ্যালয়।

ঔপনিবেশিক ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান দুই ব্যক্তিত্ব রবীন্দ্রনাথ ও বিবেকানন্দের কাছে ন্যূনতম আস্থা অর্জন করতে পারেনি। সমাজের মুষ্টিমেয় কিছু মানুষের জন্য ইংরেজি ভাষাবাহিত পাশ্চাত্যের তৎকালীন শিক্ষা বিশ্বের প্রভূত জ্ঞান আহরণের সহায়ক হলেও তার সঙ্গে দেশজ ভাব ও সংস্কৃতির কোনোরূপ সংস্পর্শ ছিল না। মনুষ্যত্ববর্জিত সেই শিক্ষা আমাদের একনিষ্ঠ দাসপ্রবণতা অর্জনে যতটা পারঙ্গম করে তুলেছিল, তার সামান্য অংশ ব্যয় করেনি শিক্ষার মাধ্যমে আমাদের স্বনির্ভরশীলতায় বলীয়ান ক'রে তুলতে। ঔপনিবেশিক শিক্ষার এই অন্তর্নিহিত কলুষ দূর করতে প্রকৃত শিক্ষার উদ্দেশ্য, স্বরূপ ও তার কার্যকারিতা প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ও বিবেকানন্দ, দু'জনেই আপন ধীরপ্রাজ্ঞ মতামত বিস্তৃতভাবে ব্যক্ত করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা (১৯০৮) গ্রন্থে তো বটেই, এছাড়া শান্তিনিকেতনে আশ্রম-বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাকালের বিভিন্ন ভাষণে আর বিপুল সাহিত্য ও চিঠিপত্রের নানান প্রকোষ্ঠে মণিমুক্তোর মতো বিছিয়ে রয়েছে শিক্ষাসম্পর্কিত তাঁর সুচিন্তিত ধারণারাজি। অন্যদিকে শিক্ষাপ্রসঙ্গে বিবেকানন্দের বক্তব্যের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম এবং খানিকটা বিশ্লিষ্টও বটে। ছোট ছোট গদ্য ও সাময়িক কিছু ভাষণ থেকে তাঁর বক্তব্যের নির্যাস আহরণ ক'রে নিতে হয়। তবু সামগ্রিকভাবে শিক্ষাসম্বন্ধীয় উভয়ের ধারণাকে পাশাপাশি রাখলে মিল-অমিলের একটি স্পষ্ট রূপরেখা আমাদের চোখে ধরা দেয়, যেখান থেকে এই দুই মনীষার শিক্ষা বিষয়ক চিন্তা-ভাবনার তুল্যমূল্য বিচার স্বভাবতই চলে আসে। যেমন, দেশজ মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণের কথা উভয়ে বললেও রবীন্দ্রনাথ বিশেষভাবে জোর দিয়েছিলেন মাতৃভাষার ওপর, এরজন্য বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় গড়বার পক্ষেও সওয়াল করেন তিনি। ঠিক এই বিষয়েই বিবেকানন্দের আবার পক্ষপাতিত্ব ছিল সংস্কৃত ভাষার প্রতি, প্রাচীন ভারত সংস্কৃত অধ্যয়নের মধ্যে দিয়ে একদিন যে পরিপূর্ণ সত্যের সন্ধান পেয়েছিল, বর্তমান যুগমানসে তিনি সেই শাশ্বত বিদ্যার জাগরণ ঘটাতে চেয়েছিলেন। এধরণের কিছু দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য থাকলেও শিক্ষা বিষয়ে বেশকিছু ক্ষেত্রে তাঁদের মৌল সাদৃশ্যও লক্ষ করা যায়। শিক্ষার মুখ্য উদ্দেশ্য যে আত্মকর্তৃত্ব অর্জন, সে বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ও বিবেকানন্দের কোনো দ্বিমত ছিল না। আপন স্ব-রাজ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনে পাশ্চাত্যের বিদ্যাকে আহরণ করবার কথা বলেছেন উভয়েই। আবার শিক্ষাদাতার ভূমিকায় একজন শিক্ষকের থেকে গুরুর প্রয়োজনকে দু'জনেই অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন, যিনি কেবল ছাত্রদের প্রথাগত পাঠের শিক্ষা দিয়ে ক্ষান্ত থাকবেন না বরং দৈনন্দিন জীবনাচরণের মধ্যে দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে প্রকৃত শিক্ষার স্বরূপটি উন্মুক্ত ক'রে দেবেন। আলোচ্য প্রবন্ধে আমরা মুখ্য কিছু বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে শিক্ষাকে কেন্দ্র ক'রে রবীন্দ্রনাথ ও বিবেকানন্দের চিন্তাদর্শনের তুলনামূলক পর্যালোচনা করবার প্রয়াস নেব।

Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL

Paper ID : tirj/ October 22/article-42

Page No : 343-350

Published In :Volume 2, Issue 4

DOI (Digital Object Identifier) : 

E ISSN : 2583 -0848

Creative Commons Attribution 4.0 International License