Published Paper Details:

BISMRITIR MAJHE SHISHU SAHITTIK SUKHALATA RAO.

RIMPA MAITY 

শিশু, সাহিত্য, সুখলতা রাও, ছবি, গল্প, রূপকথা, কবিতা, ছড়া, অনুবাদ, মৌ্লিক।

ছড়াকার সুকুমার রায়ের সহোদরা ও চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পিসি হলেন বিশিষ্ট শিশু-সাহিত্যিক ও সমাজসেবক সুখলতা রাও। সুখলতা রাও, ডাক নাম হাসি। ১৮৮৬ সালের ১০ই অক্টোবর, কলকাতার ১৩ নং কর্ণওয়ালিস স্ট্রিটের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন হাসি ওরফে সুখলতা। তাদের আদি বাড়ি ছিল বর্তমান বাংলাদেশের ময়মনসিংহের মসুয়ায়। সুখলতার পিতা বিখ্যাত শিশু সাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ, চিত্রশিল্পী, যন্ত্রকুশলী উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী। তাঁর মা বিধুমুখী দেবী ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক, ব্রাহ্ম সমাজের অন্যতম প্রধান নেতা দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের কন্যা। সুখলতা রাও কলকাতায় ব্রাহ্ম বালিকা বিদ্যালয় এবং বেথুন কলেজ থেকে ব্যাচেলার ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯০৭ সালে উড়িষ্যার জয়ন্ত রাও-এর সাথে কটকে চলে যান। কটক যাওয়ার পর তিনি সেখানে ‘শিশু ও মাতৃ্মঙ্গল কেন্দ্র’, ‘উড়িষ্যা নারী সেবা সংঘ’ প্রভৃতি সামাজিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সমাজসেবার পাশাপাশি তিনি বাংলা ও ইংরেজিতে ‘আলোক’ নামে একটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেন।

সুখলতার প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘গল্পের বই’ (১৯১২)। তারপর একে একে প্রকাশ পেয়েছে ‘আরো গল্প’ (১৯১৫), ‘পড়াশুনা’ (১৯২১), ‘নতুন পড়া’ (১৯২২), ‘বেহুলা’ (১৯৩৩) প্রভৃতি গ্রন্থগুলি। বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে প্রকাশ পেয়েছে তাঁর বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য রচনা। ‘নূতন ছড়া’ (১৯৫২), ‘নিজে পড়’ (১৯৫৬), ‘নিজে শেখ’ (১৯৫৭), ‘আলিভুলির দেশে’ (১৯৫৭), ‘নানান গল্প’ (১৯৬৩), খেলার পড়া (১৯৬২), ‘খোকা এল বেরিয়ে’ (১৯৬১), ‘ঈশপের গল্প’ (১৯৬৩), ‘হিতোপদেশের গল্প’ (১৯৬৫), ‘কিশোর গ্রন্থাবলী’ (১৯৬৬) প্রভৃতি রচনাগুলি এই পর্বের সৃষ্টি।

একদিকে প্রাচীন পুরাণ-কথা-রূপকথা, লোককথার সংগ্রহ-সংকলণ, অনুবাদ। অন্যদিকে অভিনব মৌলিক বিষয় ও ভাবনায় সংযোজন, সব মিলে সুখলতার সাহিত্যসৃষ্টির ধারাটি ছিল গতিশীল, প্রাঞ্জল ও সমৃদ্ধ। ১৯০৬-০৭ সালে কলকাতায় ভারতী কৃষি ও কারিগরী প্রদর্শনীতে তিনি তেল রং বিভাগে পদক পান। ১৯১০ সালে ইলাহাবাদে ইউনাইটেড প্রভিনেন্সের (বর্তমান উত্তরপ্রদেশ) প্রদর্শনীতে জল রং বিভাগে পদক জেতেন। ওই বছরই প্রবাসীতে ছাপা হয় সুখলতার আঁকা ‘পূজারিণী’, পরের বছর ‘সাবিত্রী’।

রবীন্দ্রনাথের ‘রাজা ও রাণী’ নাটক ও ‘জাপান যাত্রী’ ভ্রমণ পত্রাবলীর অনুবাদ করেছিলেন তিনি যথাক্রমে ‘Devouring Love’ ও ‘A Visit to Japan’ নামে। নিউইর্য়ক থেকে অনুবাদ দুটি প্রকাশ হয়েছিল রবীন্দ্র জন্মশতবাষিকীর (১৯৬১) লগ্নে ও ‘East-West Institute Series’-এর বই হিসাবে। তাঁর ‘নিজে পড়’ গ্রন্থটি শিশুসাহিত্য সংসদ কর্তৃক প্রকাশিত হয় এবং এরজন্য তিনি ‘লেখিকা’ পুরস্কার লাভ করেন। সমাজসেবায় অবদান রাখার জন্য তিনি স্বামীর সঙ্গে যৌথভাবে ‘কাইজার-ই-হিন্দ’ পদক লাভ করেন।

এই বহুমুখী প্রতিভা ১৯৬৯-এ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আজীবন তিনি সাহিত্য চর্চা করেছেন। শিশুসাহিত্যের বিষয়, বক্তব্য ও আঙ্গিক নিয়ে ভেবেছেন। শিশুর বিকাশের স্তরে তার শারীরিক, মানসিক গঠনের কথা আলোচনা করেছেন তিনি। বিচিত্র তাঁর রচনাসম্ভার। সাহিত্যর পাশাপাশি সমাজ ও সংসারের দায়িত্ব পালন করেছেন যথাযথভাবে।

Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL

Paper ID : tirj/ October 22/article-46

Page No :  378-384

Published In :Volume 2, Issue 4

DOI (Digital Object Identifier) : 

E ISSN : 2583-0848

Creative Commons Attribution 4.0 International License