Published Paper Details:
ABU SAYEED AYYUBER SAMAJ TANTRA O SAMYBADI BHABNA.
আবু সয়ীদ আইয়ুবের সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদী ভাবনা
KUNAL DAS
রুশ বিপ্লব, সামন্ততন্ত্র, মার্কসবাদ, স্বৈরাচার, গণতন্ত্র, রবীন্দ্র সমালোচক, আধুনিকতা ও রবীন্দ্রনাথ
বাংলা সাহিত্য সমালোচনার ইতিহাসে আবু সয়ীদ আইয়ুব একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব। আমরা তাঁকে চিনি মূলত রবীন্দ্র সমালোচক হিসেবে। অথচ তিনি অন্যান্য বিষয় নিয়েও নানা প্রবন্ধ লিখেছেন, যার বেশিরভাগই সংখ্যা গরিষ্ঠ বাঙালি পাঠকের অজ্ঞাত। এর মধ্যে অন্যতম তাঁর সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদকে নিয়ে লেখা প্রবন্ধসমূহ। আইয়ুব ব্যক্তিগতভাবে মনে করেতেন সমাজতন্ত্রের সঙ্গে গণতন্ত্রও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে আছে। কোন একটিকে বাদ দিয়ে অন্যটির সফল রূপায়ন সম্ভব নয়। তাঁর তীক্ষ্ণ সমালোচনার দৃষ্টিতে সমাজতন্ত্র, সাম্যবাদ, স্বৈরাচার এবং গণতন্ত্রের স্বরূপ উদঘাটন হয়েছে। সাম্যবাদী সোভিয়েত রাশিয়াও যে ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের স্বরূপ উপলব্ধিতে অক্ষম সেই বিষয়ে বারবার আক্ষেপ লক্ষ্য করা গেছে প্রাবন্ধিকের বক্তব্যে। সাম্যবাদ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে আইয়ুব গৌতম বুদ্ধ ও কার্ল মার্কসের প্রসঙ্গ নিয়ে এসেছেন। মানবকুলের দুঃখ ও সমস্যা– মার্কস এবং বুদ্ধদেব উভয়ের কাছেই ছিল সুস্থ সমাজ ব্যবস্থার পথে প্রধান অন্তরায়। সমস্যা উভয়ের কাছে এক হলেও তাদের সমাধানের পথ কিন্তু একই রকম ছিল না। কেননা দুজনে দু’রকম দৃষ্টিভঙ্গিতে সমস্যাগুলিকে দেখেছিলেন। আইয়ুব রুশ বিপ্লবের সুফল ও কুফল সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করেছেন। দীর্ঘদিনের ধর্মকেন্দ্রিক ও সামন্ততন্ত্র তথা ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে রাশিয়ায় শ্রমনির্ভর সমাজতান্ত্রিক সভ্যতার সূচনা ঘটে। একে পৃথিবী শ্রেষ্ঠ বিপ্লবগুলির মধ্যে অন্যতম বলা যেতে পারে। রুশ বিপ্লবের এই সুদূর প্রসারী প্রভাব এবং তার সাফল্যকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যতে এক সুন্দর সম্ভাবনাময় সমাজের আদর্শ আমাদের কাছে ফুটে ওঠে। এই রুশ বিপ্লবের প্রতি শ্রদ্ধা ও আবেগের পাশাপাশি সমালোচনার দৃষ্টিভঙ্গিও ভীষণভাবে প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রে শিল্পীর স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করতেও আইয়ুব ভোলেননি। ব্যক্তি স্বাধীনতার চরমতম নিদর্শন দেখা যায় ব্যক্তির সৃষ্টিতে। অর্থাৎ সাহিত্যে, শিল্পে, চিত্রকলায়, সংগীতে, বিজ্ঞানে, দর্শনে। কিন্তু স্বৈরাচারী শাসনযন্ত্র যদি এই সৃষ্টির উপর বেরি পড়াতে শুরু করে তবে সেই সৃষ্টি কখনোই ধ্রুপদী হতে পারে না। একথা অবশ্যই সত্য যে মার্কসবাদী আন্দোলন সাহিত্যের সীমাকে আরো বিস্তৃত করেছে। ইতিপূর্বে যে সাহিত্যগুলো লেখা হতো তার সবটাই ছিল মূলত ধর্ম নির্ভর অথবা ধনী ব্যক্তিবর্গের জীবন নির্ভর। মার্কসবাদই প্রথম সাহিত্যে এক নতুন সমাজ চেতনার অবতারণা করে। মার্কস ভক্তদের সর্বাপেক্ষা বড় সীমাবদ্ধতা যে তাঁরা মানুষের চিন্তা-ভাবনা, মননকে শৃঙ্খলিত করার ঘটনাকে, অন্যায় বলে ভাবতেই পারেন না। মার্কস স্বয়ং মানুষের মনের সঙ্গে প্রকৃতির পরিমাণগত স্তরের এবং গুণগত স্তরের সম্পর্কের কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু তাঁর অনুগামীরা মানবিক বিষয়গুলিকে কেবলমাত্র জৈবিক প্রক্রিয়া হিসেবেই দেখতে চান। তাই আমাদের সাম্যবাদের কুফলগুলিকে যথাসম্ভব এড়িয়ে এর ভালো দিকগুলিকে বাস্তবের মাটিতে ফলপ্রসূ করে তুলতে হবে। যার ধরণা পাওয়া যায় আইয়ুবের এই সমস্ত প্রবন্ধগুলিতে।
Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL
Paper ID : tirj/July/22/article-28
Page No : 254 – 263
Published In :Volume 2, Issue 3, July 2022
DOI (Digital Object Identifier) :
E ISSN : 2583-0848
Creative Commons Attribution 4.0 International License
Article link :https://tirj.org.in/volume-02-issue-03-july-2022/