Published Paper Details:

SHOUKAT OSMAN, SOIYAD OYALIULLAHA, ABU ISHAK : PURBO BANGLAR UPONNYASE SAMAJ SANSKRITI (1947-1970)

MD. HABIBULLA 

দেশভাগ, পূর্ববঙ্গ, মুসলমান, উপন্যাস, সমাজ-সংস্কৃতি, লালসালু, সূর্য-দীঘল বাড়ী, চৌরসন্ধি।

উনিশ শতকে কলকাতা কেন্দ্রিক হিন্দু মধ্যবিত্তদের মধ্যে যে রেনেসাঁ বা নবজাগরণের উন্মেষ ঘটেছিল, বিভিন্ন কারণে মুসলমানদের মধ্যে তা দেখা যায়নি। উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে এই নবজাগ্রত হিন্দু মধ্যবিত্ত শ্রেণির হাতেই বাংলা উপন্যাসের শুভ-সূচনা। দেশ বিভাগপূর্ব বাংলার শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রধান ও একমাত্র কেন্দ্রস্থল ছিল কলকাতা। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, সাময়িকী, লেখকদের রচনাবলী প্রভৃতি কলকাতা থেকেই প্রকাশিত হত। মূলত ১৯০৫ এর বঙ্গভঙ্গের সময়ে ঢাকার গুরুত্ব বৃদ্ধি পায় ও ১৯৪৭ এর পর ঢাকা পূর্ববঙ্গের রাজধানীতে পরিণত হয়। ফলে বিভাগোত্তর সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকার নগরায়ণের সঙ্গে সঙ্গে ওপার বাংলার লেখকদের সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প কেন্দ্রভূমি গড়ে উঠতে থাকে। যা বর্তমানে বাংলাদেশের সাহিত্য নামে পরিচিত। বাংলাদেশের সাহিত্যের ধারাটি বৃহত্তর বাংলা সাহিত্যের ঐতিহ্যের অনুসারী হলেও, পূর্ববাংলার উপন্যাস সমূহের একটি স্বতন্ত্র পটভূমি আছে। এই ঐতিহাসিক পটভূমি ও সাথে সাথে সমাজ-বাস্তবতা, গ্রামীণ-নাগরিক জীবন, আরবি-ফারসি শব্দের ব্যবহার ও ভাষার আঞ্চলিকতা, মুসলমান মানস, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ প্রভৃতি পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশের সাহিত্যকে দিয়েছে এক স্বতন্ত্র পরিধি ও পরিচিতি। যেমন, পূর্ববঙ্গের উপন্যাসে গ্রাম-কেন্দ্রিকতা বিশেষভাবে লক্ষ্য করা যায়। এপার বঙ্গে যে সময় ‘শহরতলী’, ‘চেনামহল’, ‘কিনু গোয়ালার গলি’ বা ‘বারো ঘর এক উঠোন’ প্রভৃতি রচিত হচ্ছিল, তখনও ওপার বঙ্গে সেই অর্থে নগরাশ্রিত উপন্যাসের দেখা মেলেনি। কারণটা সেই ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক। বিশ শতকের প্রথম দিকে পূর্ববঙ্গে কিছু সংখ্যক সাহিত্য রচিত হলেও, মূলত পূর্ববঙ্গের সাহিত্যের বীজ প্রোথিত হয় তিনের দশকে। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজের কয়েকজন তরুণ শিক্ষক ও ছাত্রদের মিলিত উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা লাভ করে ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ (১৯২৬) এবং তার বার্ষিক মুখপত্র ‘শিখা’ (১৯২৭)। প্রাক্-স্বাধীনতা পর্বে পূর্ববঙ্গে উপন্যাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হলেও, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে যে মধ্যবিত্ত-মুসলমান সম্প্রদায় গড়ে উঠেছিল, সেই সম্প্রদায়ের কয়েকজনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই পূর্ববঙ্গের উপন্যাসের প্রকৃত পথচলা। আর বিভাগ পরবর্তীকালে পূর্ববঙ্গের সাহিত্যের এই বিপুল ধারাটিকে যারা বিশেষভাবে পরিপুষ্টতা দান করেছিলেন তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনজন হলেন শওকত ওসমান, সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ ও আবু ইসহাক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাজশেখর বসু-কে উৎসর্গ করে লিখেছিলেন— ‘সহজ কথায় লিখতে আমায় কহ যে/সহজ কথা যায় না লেখা সহজে।’ আসলেই কথাটা খাঁটি। যেমন আমাদের অতি পরিচিত শব্দ ‘সমাজ’, ‘সংস্কৃতি’, ‘সভ্যতা’ প্রভৃতি বিষয়ে লেখা শুরু করা খুব সহজ, কিন্তু শেষ করা ততটাই কঠিন। কারণ এই পরিভাষা গুলি খুবই জটিল, কুটিল; বহু বিতর্কিত ও সদা বিবর্তিত। তাই ভারতীয় সংস্কৃতির ত্রিবেণী-স্রোতস্বিনীর মতো এই আলোচনাও ভবিষ্যতে চলতেই থাকবে, কারণ এ আলোচনার- ‘শেষ নাহি যে’। 

Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL

Paper ID : tirj/ October 22/article-23

Page No : 188-202

Published In :Volume 2, Issue 4

DOI (Digital Object Identifier) : 

E ISSN : 2583-0848

Creative Commons Attribution 4.0 International License