Published Paper Details:

SAHITTYE SECHYA MRITTU JENO AK BIKALPO ARAM : JIBONANANDA O RABI SHANGKAR.

SUDESHNA MOITRA 

স্বেচ্ছামৃত্যু, অর্থহীন জীবন, শৈল্পিক হতাশা, অস্তিত্ব সংকট, ইলিউশন, নাগরিক শূন্যতা, রিপুক্লান্তি, অভিশপ্ত সন্তান, স্মৃতির যক্ষ, জরায়ুর অন্ধকার।

বর্তমান বিশ্বে ইউথেনেশিয়া বা স্বেচ্ছামৃত্যুর প্রতি স্পৃহাবোধ মানুষের ভয়ঙ্কর ভাবে বেড়েছে। বেঁচে থাকার বাঁধনগুলি প্রতিদিন হয়ে উঠছে নরম। এই অর্থহীন জীবনের ক্ষেত্রে বাস্তবের ভূমি চিকিৎসাবিজ্ঞানের ব্যর্থতাকে দায়ী করে জীবন্মৃত শরীরকেই মৃত্যুকামী হিসেবে ঘোষণা করছে। কিন্তু এই আত্মহত্যার অধিকারের দাবি শুধু শরীরের ইন্দ্রানুভূতিময় যন্ত্রণা থেকে বাঁচার জন্য নয়। এই মৃত্যুইচ্ছা আসছে অনর্থক দিশাহীন আশাহীন আত্মগ্লানি দিয়ে নির্মিত মন থেকেও। এই মন যোগ ঘটাচ্ছে বোধ ও বোধির। এই যোগসূত্র সবচেয়ে বেশি স্থাপিত হয় নিবিড় শিল্পীসত্তায়। সেই ঘোর থেকে মৃত্যুকাঙ্ক্ষা জন্ম দেওয়ার শৈল্পিক কৌশল বহুভাবে করে গেছেন দুই কবি ও লেখকমন। কবি জীবনানন্দ দাশ এবং সাহিত্যিক রবিশংকর বল- যেন একই মুদ্রার দুটি অংশ। দুজনের বোধ ও মননের সংঘাতে বারবার ঘুরেফিরে এসেছে এই মৃত্যুনেশা। সেই নেশার বিশ্লেষণ বুদ্ধি দিয়ে করা সম্ভব নয়। অনুভূতি দিয়ে উপলব্ধি করলেই বোঝা যায় মনের মৃত্যুই যেন শিল্পীর রচনায় প্রকৃত মৃত্যুর কান্না বা স্তব্ধতা। কবিতা ও গল্পের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা স্থবিরতা, জরায়ুমুখী প্রত্যাবর্তন-প্রবণতা কিম্বা হাওয়ায় মিশে যাওয়ার প্রবলতর হারিয়ে যাওয়ার কামনা, এই সবকিছুই মৃত্যুর প্রতি কবি ও লেখকের একান্ত আকর্ষণকেই প্রধান করে তোলে। জীবনানন্দের মৃত্যুর আটবছর পর জন্ম নেওয়া রবিশংকর তাঁর লিখনবিশ্বে যে মৃত্যুর আবহ রচনা করেন, সেই বিশ্বের সাথে মিল থাকে না জীবনানন্দের পূর্ববর্তী কোনো লেখকের মৃত্যুচেতনার। কবি যে ঘোরের পাঠশালা রেখে গেছিলেন তাঁর কাব্যের ভিতর দিয়ে,সেই পাঠশালার সবচেয়ে যোগ্যতম ছাত্র হয়ে উঠতে পেরেছিলেন লেখক রবিশংকর বল। জীবনানন্দের কাছে মৃত্যুর স্বাদ থেকে ফিরে আসার তাড়নায় বারবার ডাক পড়ে প্রকৃতির নিবিড় কোলের। কবি শান্তি পায় না কিন্তু প্রকৃতি ছাড়া কোনোকিছুই পারবে না অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুনেশা থেকে কবি'কে থামিয়ে রাখতে। কিন্তু লেখক রবিশংকর বল যেন জীবনানন্দের থেমে থাকাগুলিকেই পরিণতি দিতে বন্ধ করে দেয় ঘরে ফেরার দরজা। ভেঙে দেয় স্মৃতি আর স্মরণের সাঁকো। মুছে দিতে চায় যেকোনো ভাবমূর্তির প্রতিষ্ঠান। অস্তিত্বকে বিলীন করে দেওয়ার এই শৈল্পিক খেলায় লেখক দগ্ধ হতে হতে কোথাও যেন কবি'কে মুক্তি দেওয়ার পদ্ধতি খুঁজে চলেন।অনেকটা গয়ায় পিণ্ড দানের মতোই। এই পিণ্ডদানের ভার লেখককে কেউ দেয়নি। অভিশপ্ত পৃথিবীর অনিবার্য ভার বয়ে নিয়ে যেতে যোগ্য পিতার যোগ্য সন্তানেরা হয়তো এভাবেই জন্ম নেয়- মৃত্যুপথকে চিনিয়ে দেওয়ার অভিপ্রায়ে।

Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL

Paper ID : tirj/ October 22/article-35

Page No :  285-292

Published In :Volume 2, Issue 4

DOI (Digital Object Identifier) : 

E ISSN : 2583-0848

Creative Commons Attribution 4.0 International License