Published Paper Details:

AMAR MUKHER OPOR FUTANTA ITIHAAS, ATIT PURUSHER CHAYAZATRA : DEB DAS ACHARYAEE SHRESTHA KOBITA.

SWARAJIT MISRA

সত্তরের দশকের এক উল্লেখযোগ্য কবি দেবদাস আচার্য। বাংলা কবিতার ধারায় সত্তরের দশক নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে দাঁড়িয়ে যাঁরা কবিতা চর্চা করেছেন তাঁদের অধিকাংশেরই জন্ম চল্লিশের দশকে। স্বাভাবিকভাবেই কবিদের বেড়ে ওঠার সঙ্গে অগাস্ট আন্দোলন, নৌ বিদ্রোহ, দেশভাগ, দাঙ্গা, মন্বন্তরের আঁচ আজ তাঁরা টের পেয়েছেন। কবি দেবদাস আচার্যের জন্ম ১৯৪২ সালের ‘ভারত ছাড়ো আন্দোলন’ আর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঐতিহাসিক পটভূমিতে। তিনি দেখেছেন উদ্বাস্তু জীবনের বিপন্নতা, দেখেছেন মন্বন্তর, খাদ্য আন্দোলন এবং নকশালবাড়ি আন্দোলন। এভাবেই তাঁর মননক্ষেত্রটাই নির্মাণ হয়েছিল বিপ্লব আর আন্দোলনের সদা অস্থির আর সঙ্কটময় প্রেক্ষাপটে। একদিকে রাজনৈতিক উত্তাল সময় অন্যদিকে খাদ্য বাসস্থান আর্থিক নিরাপত্তা নিয়ে লড়াই তার কবিতার মনন ক্ষেত্র তৈরি করেছিল। তার প্রথমদিকের কাব্যগ্রন্থে আমরা যেমন নকশালবাড়ি আন্দোলন, মন্বন্তর, খাদ্য আন্দোলনের কথা খুঁজে পায়, একইভাবে ব্যক্তি জীবনের অভাব, অনটন ও টানাপড়েনকে অপূর্ব বেদনা মধুর করে তুলে ধরেছেন তিনি। তার কবিতা যেমন রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সমাজ জীবনের নানা বিষয়ের অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে, আবার একইসঙ্গে লোকায়ত জীবনের ছবিও নিখুঁতভাবে তুলে ধরেছে। কবি  দেবদাস আচার্য নদীয়ার কৃষ্ণনগর থেকে চার দশকেরও বেশি সময় ধরে কাব্যচর্চা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠান থেকে দূরে নিভৃতে একজন সাধকের মত জীবন যাপন করে চলেছেন তিনি। তাঁর কাব্যগুলিতে দেশ কাল সমাজের ছবি উঠে এসেছে। সত্তরের স্লোগান গ্রাম দিয়ে শহর ঘেরার প্রণেতা যেমন সত্তরের কবি নির্মল হালদার, বীতশোক ভট্টাচার্য, মনীন্দ্র গুপ্ত একই পথের কান্ডারী দেবদাস আচার্যও।

তাঁর কালক্রমে রাজনীতিচেতনা, বিপ্লব, সাম্রাজ্যবাদ, আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, শ্রেণীসংগ্রাম, ধনতন্ত্র ইত্যাদি প্রবলভাবে ভাষা পেয়েছে। এক দিকে উত্তাল সত্তর দশকের ঘটনাপুঞ্জের বহিঃপ্রকাশ অন্যদিকে স্মৃতিময় শৈশবের ডুব দিয়ে জীবনের সহজ সরল রূপ তিনি খুঁজে গেছেন। তাই ‘আমার কালক্রম ও প্রতিধ্বনি’, ‘ঝড়ঃ সত্তর দশক’ এই কবিতাগুলির পাশাপাশি তিনি লেখেন ‘সে নিড়িনি চালায় শস্যে’, ‘আমার জলের পোকা’ কবিতাগুলি। দেশকালের প্রতি তাঁর দ্বিবিধ দৃষ্টিক্ষেপ এই সময় সূচিত হল —

“চৈত্রের গাজনে আমি লেংটি পরা শিব সাজলাম

বোলান যাত্রায় আমি হলাম রামভক্ত সুগ্রীব...

এদিকে চৈত্রের মাঠ চেটে খায় ঝুলন্ত সূর্যের জিভ

এদিকে আজানধ্বনি ভেসে আসে বুক বরাবর

আমিও পোশাক খুলে নেমে যাই এইসব পরিপূর্নতায়...

বাথানে ছাগল ভেড়া ফিরে আসে, রাখাল উড়ায় গামছা

গোরু মহিষের পায়ে ভেঙে ভেঙে ধুলো হয় সন্ধ্যা নেমে আসে।

খাড়াই তালের বনে লটকে থাকে সীমান্তের শেষ কারুকাজ”

(আমার জলের পোকা/কালক্রম ও প্রতিধ্বনি)

আজ যা মনের অচেতন স্তরে ডুবে থাকা ছবি সেইসব নিয়েই তার ওপারের শৈশবজীবন ‘সীমান্তের শেষ কারুকাজ’। এই সব পরিপূর্ণতার মধ্যে থেকে যায় কবিতার আদি ভিত্তিভূমি। তাঁর কবিতায় আবহমান ভারতীয় গ্রামের ছবি একই সঙ্গে তার শান্ত সমাহিত গাম্ভীর্য ও মাটির গন্ধ উঠে আসে।

Journal : TRISANGAM INTERNATIONAL REFEREED JOURNAL

Paper ID : tirj/ April23/article-33

Page No : 249-258

Published In :Volume 3, Issue 2

DOI (Digital Object Identifier) : 

E ISSN : 2583-0848

Creative Commons Attribution 4.0 International License